প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে বিএনপির ক্ষোভ: নির্বাচন পিছানোর কৌশলী চেষ্টার অভিযোগ

       ছবি সংগৃহীত 


জাতীয় রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ যোগ করেছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ। গত শুক্রবার (৬ জুন) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দিলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, এই সিদ্ধান্ত "ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল" এবং প্রধান উপদেষ্টা "একটি বিশেষ গোষ্ঠীর প্রভাবে" কাজ করছেন।  

🔴 বিএনপির জরুরি বৈঠক ও তীব্র সমালোচনা

ভাষণের পর বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ড. ইউনূসের শব্দচয়ন ও সময় নির্ধারণ রাজনৈতিক ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করেছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এপ্রিলে নির্বাচন দেওয়ার পেছনে কোনও যুক্তি নেই। এটি শুধু সংকট বাড়াবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।


🔴 বিতর্কিত বিএনপির মূল আপত্তিগুলো হলো:  

১. সময় নির্ধারণ: এপ্রিল মাসে নির্বাচন হলে রমজান, প্রচারণার জটিলতা ও পরীক্ষার মৌসুমে ভোটার উপস্থিতি কমবে।  
২. ম্যান্ডেট লঙ্ঘন: ভাষণে বন্দর ও করিডোর ইস্যুতে আলোচনা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের বাইরে।  
৩. নিরপেক্ষতা হারানো: বিএনপি দাবি করে, উপদেষ্টামণ্ডলী এখন "নির্বাচনী ফায়দা লুটতে" কাজ করছে।  


🔴 রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, এপ্রিলের তারিখে একটি জেদ কাজ করেছে। এটি গ্রহণযোগ্য হবে না। অন্যদিকে, ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমানের মতে, সরকার কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে পারবে না—তা স্পষ্ট করেনি।

🔴 অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া

🔵 জামায়াতে ইসলামী ও কয়েকটি দল এপ্রিলের নির্বাচনকে "সময়োপযোগী" বলে স্বাগত জানিয়েছে।  
🔵 আওয়ামী লীগ-সমর্থক গোষ্ঠীগুলো বলছে, সরকার অন্তত একটি তারিখ দিয়েছে, যা স্বস্তিদায়ক।


🔴 সরকারের পাল্টা পদক্ষেপের অপেক্ষা

বিএনপির এক শীর্ষ নেতা (নাম গোপন রাখার শর্তে) বলেন, আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। এখন সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখার বিষয়।


🔴 বিদেশি সহযোগিতা নিয়ে বিতর্ক

ভাষণে রাখাইন করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুতে বিদেশি সহায়তার উল্লেখ নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিএনপির দাবি, এসব ইস্যুতে "অস্বচ্ছতা" সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে।  


🔴 পরবর্তী পদক্ষেপ

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিএনপি যদি রাস্তায় নামে বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অভিযোগ তোলে, তাহলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই বিএনপির সমালোচনার জবাব আসতে পারে।  



©️প্রতিবেদন: বোল্ড ট্রিবিউন ডেস্ক  

Post a Comment

Previous Post Next Post