আ.লীগ এমপির সম্পদ পাহারায় বিএনপি নেতার ছেলে

 আ.লীগ এমপির সম্পদ পাহারায় বিএনপি নেতার ছেলে




রাজশাহীর সাবেক আওয়ামী লীগ এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর অবৈধ সম্পদ ও দুর্নীতির সাম্রাজ্য, এখন বিএনপি নেতার ছেলের তত্ত্বাবধানে

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্য ও মাদক কারবারের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যান। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে গেলেও তার অবৈধ সম্পদ ও সাম্রাজ্য এখন বিএনপি নেতা রশিদুজ্জামান মিল্লাতের ছেলে শাহাদাত বিন জামান শোভনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  


অবৈধ সম্পদের পাহাড় রয়েছে ওমর ফারুকের:  

- রাজশাহীতে ১০ তলা বিলাসবহুল "থিম ওমর প্লাজা" (মাসিক আয় ৫০ লাখ টাকা ভাড়া), সাগরপাড়ায় সাড়ে ৩ বিঘার বিশাল বাড়ি, শতাধিক কোটি টাকার জমি, শপিংমল, বাগান ও পুকুর।  

- ঢাকায় ফ্ল্যাট, দামি প্লট।  

- বিদেশে লন্ডন ও মালয়েশিয়ায় বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, তিনি হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন।  


বিএনপি নেতার ছেলের ভূমিকা:

শাহাদাত বিন জামান শোভন (বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থবিষয়ক সম্পাদক রশিদুজ্জামান মিল্লাতের ছেলে) ফারুকের বড় মেয়ে নাজিফা হক চৌধুরীকে বিয়ে করেছেন। এই সম্পর্কের সুবাদে তিনি ফারুকের সম্পদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ফারুকের সম্পদ অক্ষত রয়েছে শোভনের তত্ত্বাবধানের কারণে।  


মামলা ও অভিযোগ:

- গোদাগাড়ী থানায় ফারুকের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, জমি দখল ও চাঁদাবাজির ৫টি মামলা রুজু হয়েছে।  

- দুদক ঢাকায় ফারুক ও তার স্ত্রী নিগার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও ব্যাংক লেনদেনের দুটি মামলা করেছে।  

- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে ফারুককে মাদক কারবারিদের পৃষ্ঠপোষক বলা হয়। গোদাগাড়ীর শীর্ষ হেরোইন চোরাচালানকারীদের (মনিরুল, মেহেদী, সোহেল, টিপু, তারেক, নাসির উদ্দিন নয়ন প্রমুখ) সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগসাজশ ছিল।  


প্রতিক্রিয়া:

- শাহাদাত বিন জামান শোভন ফোনে সংবাদ নিতে রাজি হননি।  

- ফারুকের মেয়ে নাজিফা চৌধুরী দাবি করেন, "আমার স্বামী বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করেন না। ভাড়া আমরা নিজেরাই তুলি।"  

- রাজশাহী বিএনপির এক নেতা (নাম গোপন) বলেন, "শোভন বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। তিনি দল ও তারেক রহমানের নামে মাসোহারা আদায় করছেন।"  


সরকারি পদক্ষেপ:

ফারুক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে **দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা** রয়েছে। তবে গত সপ্তাহ তিনেক আগে তিনি ভারতে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ।  


মূল প্রশ্ন:

এক আওয়ামী লীগ নেতার অবৈধ সম্পদ রক্ষায় বিএনপি নেতার পরিবারের সম্পৃক্ততা রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও স্বার্থের জটিল সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। এ ঘটনায় দুর্নীতির নেটওয়ার্ক ও ক্ষমতার রাজনীতির আন্তঃসম্পর্ক উন্মোচিত হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post